মলয় সিংহ, বাঁকুড়া: যোগাযোগের সুবিধার্থে আছে জাতীয় সড়ক, কিন্তু সেই জাতীয় সড়ক যদি মানুষের হয় মরণফাঁদ? কথা শুনে অবাক হলেন নিশ্চয়ই? অবাক হওয়ার কিছুই নেই ।কারণ বাঁকুড়া-রানীগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দুর্লভপুর মোড় থেকে হাঁসপাহাড়ি জঙ্গল পর্যন্ত ডিভিসির ছাই যন্ত্রণায় জীবন কে হাতে নিয়েই করতে হয় মানুষের নিত্য যাতায়াত। কারণ এই জাতীয় সড়কের উপরে সাদা ছাইয়ের স্তর পথ চলতি মানুষকে ফেলেছে বিড়ম্বনায়। যদিও হেলদোল নেই প্রশাসন বা ডিভিসি কর্তৃপক্ষের।উল্লেখ্য এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিভিসি-র মেজিয়া থার্মাল পাওয়ার স্টেশন। এখানকার উৎপন্ন তাপ বিদ্যুৎ আমাদের রাজ্যের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট সক্ষম। এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে গিয়ে প্রতিদিন উৎপন্ন হয় টনটন সাদা ছাই। আর সেই সাদা ছাই কেড়ে নিয়েছে এলাকার মানুষের সুষ্ঠু জীবন যাপন। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপন্ন বিদ্যুৎ শহরাঞ্চলে পৌঁছে যখন নীল, লাল আলোয় আলোকিত করে শহরাঞ্চলের মানুষের জীবন যাপন তখনই প্রদীপের তলের অন্ধকারের মতো বাড়ে স্থানীয় মানুষের দৈনন্দিন যন্ত্রনা। কারণ এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গা বেয়ে চলে গেছে বাঁকুড়া-রানীগঞ্জ ৬০ নাম্বার জাতীয় সড়ক। আর এই জাতীয় সড়ক বর্তমানে রূপ নিয়েছে মানুষের মরণ ফাঁদে।ডিভিসি-র ছাইপুকুরের মজুদ করা ছাই ডাম্পারে করে প্রতিনিয়ত বের হয় অন্যত্র স্থানে। আর পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয় এই জাতীয় সড়ক। সেই ছাই জাতীয় সড়কের উপর পড়ে তৈরি হয়েছে ছাই স্তরে। কোন যানবাহন সেই জাতীয় সড়কের উপর গেলেই সেই ছাই-এর স্তর উড়ে গিয়ে গোটা এলাকা করে পুরোপুরি অন্ধকার। বাকি পথ চলতি মানুষেরা পড়ে বিপদের আশঙ্কায়। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই যন্ত্রণা যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে স্থানীয়দের। যদিও তাতে কোন হেলদোল নেই ডিভিসি বা স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি সমস্যা দূরীকরণে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবে তারা। ডিভিসির মেজিয়া থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও প্রকল্প প্রধান সুশান্ত ষন্নিগ্রাহীর দাবি তাদের নিয়োগ করা কোন এজেন্সিকে দিয়ে দ্রুত এই ছাই স্তর সরানো হবে। অন্যদিকে এবিষয়ে শালতোড়া বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি বলেন ইতিপূর্বেই তিনি বিষয়টি চিঠি দিয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।