মলয় সিংহ, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র শুশুনিয়া পাহাড়ে এবার আগুন নেভানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে জলাধার। পাহাড়ে আগুন লাগলে হাতের নাগালে জল পাওয়ার জন্যই এধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাঁকুড়ার উত্তর বনবিভাগ । নজরদারি চালানোর জন্য পাহাড়ের চূড়ায় বসানো হচ্ছে নজর মিনারও ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,গত কয়েক বছর ধরে শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। এর ফলে পাহাড়ের গায়ে থাকা ঘন বনভূমির যেমন ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই ক্ষতি হচ্ছে বন্যপ্রাণের, ধ্বংস হচ্ছে জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রও। তবে কী ভাবে প্রতি বছর বনে আগুন লাগছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আগুন লাগার কারণ নিয়ে এখনো দ্বন্দ্ব কাটেনি। আর সেই আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয় বনদপ্তর সহ দমকল বিভাগকে। বিভিন্নভাবে প্রচার চালানোর সত্ত্বেও আগুন লাগানো বন্ধ করা যায়নি। ফি বছরেও বেশ কয়েকবার পাহাড়ের চূড়ায় আগুন লেগেছে বলে খবর পাওয়া গেছে । আগুন লাগার কারণ হিসেবে কেউ কেউ চোরা শিকারিদের হাত রয়েছে বলেও দাবি করে ।কেউ কেউ আবার মনে করেন কেউ বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে শুকনো পাতার স্তূপে আগুন লাগিয়ে দেয়। তবে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ কৌতুহলই রয়ে গেছে । বারংবার পাহাড়ের চূড়ায় আগুন লাগায় ভয়ে রয়েছে পর্যটকরা।
শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন লাগা নিয়ে উদ্বিগ্ন বনদফতর। বনদপ্তর জানিয়েছে শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন নেভানোর জন্য মোট ৬টি ওয়াটার রিজার্ভার তৈরি করা হচ্ছে, এবং নজরদারি চালানোর জন্য একটি নজর মিনারও বসানো হচ্ছে। এক একটি ট্যাঙ্ক এ জলধারণ ক্ষমতা ৫০০ লিটার । ৩০ মিটারের ব্যবধানে মোট ৬ টি ট্যাঙ্কে প্রায় ৩ হাজার লিটার জল থাকবে। এবং পাহাড়ের নীচে পুকুর বা জলাশয় থেকে পাম্পের সাহায্যে রিজার্ভারে জল তোলা হবে। ফলে পাহাড়ে আগুন লাগলে দ্রুত আগুন নিভানোর সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বন দফতর। বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বনাধিকারিক উমর ইমাম জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন নেভাতে ওয়াটার রিজার্ভারের কাজ শুরু করা হয়েছে । ৩০ মিটারের ব্যবধানে মোট ৬টি রিজার্ভার তৈরী করা হচ্ছে । কিছু দিনের মধ্যেই রিজার্ভার তৈরীর কাজ সম্পন্ন হবে। একই সঙ্গে জেলা বিভিন্ন জঙ্গলে আগুন লাগলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।