নিকাশি নালার বেহাল দশা, ডেঙ্গি আতঙ্কে মশা নিয়ে সমস্যায় মেজিয়াবাসী।

Malay Singha
0


মলয় সিংহ, বাঁকুড়াঃ- নিকাশি নালায় জমা জলের উপর ভাসছে প্লাস্টিক, আবর্জনা । কোথাও নালায় আগাছা, কোথাও আবার নালার জল থমকে। আর তা পঁচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও। জমা জলে মশার ডিম পেড়ে লার্ভা থেকে মশা তৈরি হচ্ছে। আর এই মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ বাঁকুড়ার মেজিয়া শিল্পাঞ্চলবাসী। এলাকায় সন্ধ্যা হলে বাড়ছে হয়েছে মশার উপদ্রব। মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে দিনে মশারি টাঙাতে হচ্ছে। মেজিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় নিকাশি নালার বেহাল দশায় এমনই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ এলাবাসীর । মেজিয়া ব্লকের ৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে রয়েছে মোট ৭৮ টি গ্রাম। বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ গ্রামের নিকাশি নালায় জমে রয়েছে আবর্জনা। সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছে বিভিন্ন নালা। ফলে দূর্গন্ধের সাথে সাথে বাড়ছে মশার উপদ্রব। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গ্রামগুলিতে বিগত বৎসরগুলোয় মশার উপদ্রব তেমন বেশি ছিল না। কিন্তু বর্তমানে মশার উপদ্রবে ঘুম ছুটেছে এলাকাবাসীর। মূলত অপরিষ্কার নালা ও আবর্জনাই শিল্পাঞ্চলে মশার আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত।মশার হাত থেকে বাঁচতে অনেক বাড়ির জানলাতেই লাগানো রয়েছে জাল। তবে তাতেও অবশ্য রেহাই মেলা ভার। অভিযোগ মেজিয়া ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে নিকাশি নালাগুলি দীর্ঘ প্রায় ৫-৭ বছর ধরে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয়নি। ফলে দূর্গন্ধ সহ মশার আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে এলাবাসীদের। শিল্পাঞ্চল জুড়ে নোংরা জল জমে থাকায় ও যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকায় শিল্পাঞ্চলে সর্বত্র মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে। মেজিয়ার রামচন্দ্রপুর অঞ্চলের রানীপুর গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু দাস জানান, দীর্ঘ ৫-৭ বছর ধরে আমার গ্রামের নিকাশি নালাটি পরিষ্কার হয়নি সরকারের তরফ থেকে । মাঝে বেশ কয়েকবার গ্রামবাসীদের উদ্যগেই পরিষ্কার করা হয়েছিল নালাটি। কিন্তু গত দু'বছর ধরে করোনার জেরে তাও বন্ধ। বর্তমানে নালার জমা জল পঁচে য বাড়ছে মশার উপদ্রব। মশার কারণে অন্ধকার নামার পরে খোলা জায়গায় বসে থাকাই দায়। বাড়িতেও মশা মারার ওষুধ, মশারী ব্যবহার করতে হয়। বর্তমানে যেভাবে ডেঙ্গি বাড়ছে তাতে করে আমরা আতঙ্কে আছি । মেজিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা সম্পদতারন দুবে জানান যে, মশার উপদ্রবে দিনের বেলায় মশারী টাঙাতে হচ্ছে আমাদের। পঞ্চায়েত থেকে মশা মারার ঔষধ দিলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে গ্রামের নালাগুলি পরিষ্কার করা হয়নি । তাই বছর বছর মশার উপদ্রব বাড়ছে । সঞ্জয় দাস নাামে এক বাসিন্দা জানান যে, শেষ কবে নালা পরিষ্কার হয়েছে মনে নেই, মশার দৌরাত্ম্যে আমার অতিষ্ঠ। সব মিলিয়ে মেজিয়া বাসিন্দাদের আশঙ্কা, মশার উপদ্রব কমানোর জন্য যদি এখনই সতর্ক না হওয়া যায় তাহলে এই রোগ হানা দিতে পারে মেজিয়াতেও। 


অন্যদিকে মেজিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি রবিলোচন গোপ অবশ্য দাবি করেছে নিকাশি নালা সাফ ও মশা দমনে নর্দমায় ঔষধ স্প্রে করার কাজ জোর কদমে চলছে। এবং জেলার অন্যান্য ব্লক গুলির তুলনায় মেজিয়ায় ডেঙ্গি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। 


 বাঁকুড়া জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দপ্তর বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেও পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে ।


 এ বিষয়ে বাঁকুড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ শ্যামল সরেন জানান এখনো বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে ডেঙ্গু আক্রান্তের হদিস মিলছে,প্রথম কথা মানুষকে সচেতন থাকতে হবে এ বিষয়ে এবং নালা নর্দমা গুলোকেও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যাতে লার্ভার সৃষ্টি না হয়। ইতিমধ্যেই ৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলেছে মেজিয়া এলাকায়। তবে যেহেতু শীত বাড়ছে তাই জেলায় ডেঙ্গি স্থিতিশীল ‌।


এহেন পরিস্থিতিতে যেন আতঙ্কে প্রহর গুনছে পুরো মেজিয়া শিল্পাঞ্চলের মানুষজন,তারা বারবার চাইছেন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে নালা গুলো পরিষ্কার করার জন্য যাতে ডেঙ্গুর মশার আর উৎপত্তি না হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top