মলয় সিংহ, বাঁকুড়া: গ্রামের অদূরেই বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ডিজপোজালের কারখানা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাড়িতে করে অন্যান্য বর্জ্যের পাশাপাশি মেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে আসা হয় সেই কারখানায়। পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয় রঞ্জিতপুর মোড় থেকে পাবয়া যাওয়ার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা। অবহেলাভরে নিয়ে আসা সেই বর্জ্য চলন্ত গাড়ি থেকে ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের রাস্তায়। রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় কাঁটা হয়ে থাকে গোটা গ্রাম। এরই প্রতিবাদে আজ গ্রামের রাস্তায় বর্জ্য বোঝাই লরি আটকে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন গ্রামের মানুষ। ঘটনা বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামের। 
বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামের অদূরেই রয়েছে বর্জ্য ডিজপোজালের বেসরকারী কারখানা। ওই কারখানায় শুধু বাঁকুড়া জেলার নয় পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হূগলী সহ বিভিন্ন জেলা থেকে মূলত মেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে এসে ডিসপোজ করা হয়। গ্রাম থেকে এই কারখানার দূরত্ব মেরেকেটে তিনশো মিটার। স্বাভাবিক ভাবে কারখানার ভেতরে থাকা বর্জ্যের স্তুপ থেকে বেরিয়ে আসা গন্ধে পাবয়া গ্রামবাসীদের গ্রামে টেকাই দায়। এর সাথে যুক্ত হয়েছে অন্য আপদ। বিভিন্ন জেলা থেকে লরিতে করে গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে অত্যন্ত অবহেলা ভরে মেডিক্যাল বর্জ্য বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় কারখানায়। সেই লরি থেকে প্রায়শই মেডিক্যাল বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জেকশানের সুঁচ, রক্ত ও ওষুধ মাখা ব্যান্ডেজ, বিভিন্ন ওষুধের শিশি, বোতল ও স্ট্রিপ এমনকি অস্ত্রোপচারে কেটে ফেলা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অংশও। সেই বর্জ্য থেকে গ্রাম জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে দূষণ। পাশাপাশি শিশুরা অসবধানতায় খেলাচ্ছলে রাস্তায় পড়ে থাকা সেই সব বর্জ্য তুলে ফেলছে হাতে। ফলে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে তাদের শরীরেও আশঙ্কায় কাঁটা গোটা গ্রাম।
স্থানীয়দের দাবী এসবের প্রতিবাদ জানাতে গেলেই কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে মিলছে হুমকি। কারখানা কর্তৃপক্ষের এই জবরদস্তির প্রতিবাদে রবিবার গ্রামের প্রান্তে মেডিক্যাল বর্জ্য বোঝাই একাধিক লরি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আস্বাস দিলেও সমস্যা মেটেনি। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ কারখানা কর্তৃপক্ষ।
