কচিকাঁচাদের নিয়ে তার কাজ হল সবুজানয়নের লক্ষ্যে নিয়মিত গাছ লাগানো এবং রক্ষনাবেক্ষন, গরমে পাখিদের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা, জলবায়ু ধর্মঘট ভাবনা ও তার জন্য নাগরিক কর্তব্য, এ সবকিছুই করছেন তার প্রাণ প্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের সাথে নিয়েই।
![]() |
পরিবেশ রক্ষায় ব্রতী শিক্ষক, নিজস্ব চিত্র |
ইন্দাস থানার কেনেটি গ্রামে বাড়ি রামকৃষ্ণ মন্ডলের। দীর্ঘ ২১ বছর শিক্ষকতার সাথে যুক্ত। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি পরিবেশের সচেতন। ভাবতেন শুধু গাছ লাগালেই হবে না। মানুষকে সচেতন করতে হবে। আগামী পৃথিবীকে বাঁচাতে তিনি শিশুদের সচেতন করার কাজ শুরু করেন। তিনি জানেন "শিশুরাই হল ভবিষ্যতের মেরুদন্ড ।ওদের মধ্যে যদি পরিবেশের প্রতি, প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা ঢুকিয়ে দেওয়া যায় তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।" ওরাই নিজ নিজ বাড়ির বড়দের সচেতন করতে সক্ষম হবে। তিনি বিদ্যালয়কে যেভাবে কর্ম মন্দির বানিয়েছেন তাতেই আমরুল প্রাথমিক বিদ্যালয় "নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার"এবং"শিশুমিত্র বিদ্যালয় পুরস্কার" পেয়েছেন। যদিও তিনি মনে করেন এই পুরস্কার পাওয়ার পিছনে অন্যান্য শিক্ষক, পড়ুয়া, অভিভাবক সকলেরই অবদান যথেষ্ট। নিখিল মন্ডল নামের এক অভিভাবক বলেন, শিশু অন্ত প্রাণ শিক্ষক রামকৃষ্ণ বাবু। প্রথম থেকেই শিশুদের সামাজিকতা,নৈতিকতা ও বিজ্ঞান মনস্কতা বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবেশমুখী করে তোলার শিক্ষা দিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা জানায়, গ্রীষ্মের সময় আমরা স্যারের সাথে পাখিদের জন্য এলাকার গাছে গাছে মাটির হাঁড়িতে জল রাখি, শষ্য দানা দিই । স্যারের সাথে স্কুলে ও নিজেদের এলাকায় নিয়মিত গাছ লাগাই।তাদের দেখাশোনাও করি। উনিই আমাদের শিখিয়েছেন "বিশ্ব ধরিত্রী দিবস" উদযাপনের মাধ্যমে পৃথিবীর সুস্বাস্থ্য ফেরানোর কথা । জলবায়ু ধর্মঘট কি ,কেন করা উচিত তা ওনার কাছেই শিখেছি।গত দু'দশক ধরে হাজারের বেশি গাছ লাগিয়েছেন বছর পঁয়তাল্লিশের রামকৃষ্ণ বাবু । ছুটির সময় এলাকায় এলাকায় ঘুরে দেখেন ছাত্র ছাত্রীরা গাছেদের যত্ন করছে কিনা। আমরুল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রাজীব কুন্ডু বলেন, রামকৃষ্ণ মন্ডল বহু বছর ধরেই এলাকায় গাছ লাগানো সহ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে পরিবেশ সচেতনতার কাজ করে চলেছেন।সম্প্রতি তিনি পরিবেশ বাঁচাতে সাইকেল চালানোর আবেদন জানিয়ে সচেতনতা প্রচার শুরু করেছেন।রামকৃষ্ণ মন্ডল বলেন, পৃথিবীর পরিবেশ যেভাবে ক্ষয় হচ্ছে তাতে ধরিত্রী জীবকূল ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে। যে সব শক্তিধর রাষ্ট্র গুলি পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারতো তারাই একে ধংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই ভবিষ্যত প্রজন্মকেই পরিবেশ রক্ষার ভার নিতে হবে। তাদেরকে সচেতন করে তোলাই তার লক্ষ্য বলে জানান প্রচার বিমুখ শিক্ষক রামকৃষ্ণ মন্ডল।