ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত বিশ্বভারতীর অধ্যাপক

Malay Singha
0

স্কাই বাংলা: এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্বভারতীর এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুললেন এক গবেষিকা। অভিযুক্ত অধ্যাপক দীর্ঘদিন ধরে ওই গবেষিকাকে প্রতারণা, শোষণ, মানসিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু সম্মানহানির ভয়ে দীর্ঘদিন মুখ খোলেননি তিনি। পরবর্তীকালে শোষণ ও নির্যাতনের মাত্রা চরমে পৌঁছলে তাঁর ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে। ‌তিনি প্রথমে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। ‌গবেষণাপত্র নিয়ে ওই অধ্যাপক তাঁকে হয়রানিও করছিলেন। এবার সুবিচার পেতে পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই গবেষিকা। গত বুধবার শান্তিনিকেতন থানায় গিয়ে তিনি অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে, বিষয়টি নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। বিষয়টিকে বিচারাধীন বলে মন্তব্য করে তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। এমনকী জানা যায়নি অভিযুক্ত অধ্যাপকের নামও।  

বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, ওই গবেষিকা ২০১৫ সালে গবেষণার জন্য বিশ্বভারতীর বিনয় ভবনে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানকার এক অধ্যাপক গবেষণার কাজে মহিলার গাইড হিসাবে নিযুক্ত হন। অভিযোগ, সেই অধ্যাপকই তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। পাশাপাশি ওই গবেষিকাকে তাঁর গবেষণার কাজে নিয়মিত চাপ দিয়ে ভিনরাজ্যে নিয়ে যেতে থাকেন। এমনকী গভীর রাতে মদ্যপ অবস্থায় ফোন করা থেকে শুরু করে ভিডিও কলে উত্যক্ত করা- বাদ ছিল না কিছুই। 

এখানেই শেষ নয়। ওই গবেষিকা যাতে অন্যত্র কোথাও বিয়ে না করেন, সে জন্য নিয়মিত চাপ দিতেন। যাতায়াতের পথে তাঁর অমতেই ট্রেন, বাস ও বিভিন্ন জায়গায় পিছু নিতেন ওই অধ্যাপক। কিন্তু গবেষিকা তাঁর কোনওরকম প্রস্তাবেই সায় দিচ্ছিলেন না। এর মধ্যেই একদিন অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগকারিণীকে নিজের গাড়িতে জোর করে তুলে ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করেন। এদিকে তখনই তাঁর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে, তিনি ঘাবড়ে যান এবং পরিবারের সম্মানহানির ভয়ে তিনি একেবারেই চেপে যান।

এদিকে তখনও তাঁর গবেষণার কাজ শেষ হয়নি। আর বিয়ে হতেই তাঁর উপর ওই অধ্যাপক নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়াতে থাকে বলে অভিযোগ। গবেষণার কাজে চরম অসহযোগিতাও শুরু হয়। এরপরেই ২০২২ সালের শুরুতে তিনি গোটা বিষয়টি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর ওই অভিযুক্ত আরও রেগে গিয়ে সেই মহিলাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নিগ্রহ করেন। এর পরই শুরু হয় তদন্ত। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে।

সেই কমিটির নির্দেশে বেশ কয়েকবার উপস্থিত হয়ে নিজের বয়ান ও তথ্য প্রমাণ জমা দেন ওই গবেষিকা । কিন্তু মাঝে এক বছর পার হয়ে গেলেও কোনও বিচার হয়নি। এমনকী ওই মহিলার এও অভিযোগ যে, বিষয়টি জানার পর গ্রাহ্য করেননি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। এরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top